ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে চাচ্ছেন কিন্তু সংশোধন করার জন্য কি কি কাগজপত্র লাগে জানেন না? তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্যই।

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার জন্য অনলাইনে আবেদন করা যায়। আবেদন করার সময় প্রয়োজনীয় কিছু ডকুমেন্ট লেগে থাকে। ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কি কি ডকুমেন্ট লাগে তার একটি বিস্তারিত তালিকা নিচে উল্লেখ করে দেয়া হয়েছে।

সংশোধনের ধরনের উপর ভিত্তি করে ভিন্ন ধরনের কাগজপত্র লেগে থাকে। শেষ অব্দি পড়লে আরও বিস্তারিত জানতে পারবেন।

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কি কি লাগে

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার জন্য আবেদন করতে গেলে জন্ম নিবন্ধন সনদের কপি, পাসপোর্ট বা ড্রাইভিং লাইসেন্স, নিকাহনামা, পিতা-মাতার ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি, শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র সহ বেশ কিছু ডকুমেন্ট লেগে থাকে। নিচে একটি বিস্তারিত তালিকা উল্লেখ করে দেয়া হয়েছে।

  1. পাসপোর্ট
  2. হলফ নামা
  3. জন্ম নিবন্ধন
  4. বিয়ের কাবিননামা
  5. ড্রাইভিং লাইসেন্স
  6. ইউটিলিটি বিলের কপি
  7. সন্তানের জাতীয় পরিচয়পত্র
  8. যেকোনো বোর্ড পরীক্ষার সনদপত্র
  9. সন্তানের বোর্ড পরীক্ষার সনদপত্র (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
  10. উপজেলা নির্বাচন অফিসারের প্রতিবেদন
  11. এমপিও/ সার্ভিস বইয়ের কপি
  12. তদন্ত প্রতিবেদন
  13. জমির দলিল পত্র (যদি থাকে)
  14. পিতা/মাতার ভোটার আইডি কার্ড
  15. বয়স প্রমাণের মেডিক্যাল টেস্ট রিপোর্ট (সিভিল সার্জন কর্তৃক)
  16. চেয়ারম্যান বা কাউন্সিলর কর্তৃক প্রদত্ত পারিবারিক সনদপত্র

আপনার ভোটার আইডি কার্ডে কোন ধরনের তথ্য ভুল আছে তার উপর নির্ভর করবে সংশোধন আবেদন করার সময় কি কি ডকুমেন্ট সাবমিট করতে হবে। নিজের নাম সংশোধন করার জন্য যেসব ডকুমেন্ট লাগবে, পিতা/মাতার নাম সংশোধন করতে সেসব লাগবেনা। ভিন্নতা রয়েছে।

এনআইডি কার্ডের ভুল তথ্য সংশোধন করার জন্য এনআইডি একাউন্ট রেজিস্টার করতে হবে। আগে থেকে একাউন্ট রেজিস্টার করা থাকলে একাউন্টে লগইন করে নিন। এরপর, সংশোধন আবেদন করার সময় ধরণভেদে নিম্নোক্ত ডকুমেন্টগুলো আপলোড করুন।

নিজের নাম সংশোধন করতে যা যা লাগে

ভোটার আইডি কার্ডে যদি আপনার নাম ভুল থাকে বা নামের বানান ভুল থাকে, তাহলে সংশোধনের জন্য আবেদন করতে চাইলে নিম্নোক্ত ডকুমেন্টগুলো প্রয়োজন হবে। আবেদন করার সময় এসব ডকুমেন্ট আপলোড করতে হবে।

  1. জন্ম নিবন্ধন
  2. বিয়ের কাবিননামা
  3. উপজেলা নির্বাচন অফিসারের প্রতিবেদন
  4. সন্তানের বোর্ড পরীক্ষার সনদপত্র
  5. যেকোনো বোর্ড পরীক্ষার সনদপত্র
  6. পাসপোর্ট
  7. এমপিও/ সার্ভিস বইয়ের কপি
  8. হলফ নামা
  9. তদন্ত প্রতিবেদন
  10. ড্রাইভিং লাইসেন্স

তবে, আপনার নামের বাংলা বানান এবং ইংরেজি বানানে যদি ভুল থাকে, সেক্ষেত্রে আলাদা করে কোনো ডকুমেন্ট সাবমিট করতে হবে। ডকুমেন্ট ছাড়াই সংশোধন আবেদন করলে আপনার নামের বাংলা এবং ইংরেজি বানান মিল করে দেয়া হবে।

পিতা/মাতার নাম সংশোধন করতে যা যা লাগে

আপনার ভোটার আইডি কার্ডে যদি পিতা/মাতার নাম ভুল থাকে কিংবা নামের বানান ভুল থাকে, সেক্ষেত্রে সংশোধনের জন্য আবেদন করতে হবে। সংশোধনের আবেদন করার সময় নিম্নোক্ত ডকুমেন্টগুলো সাবমিট করতে হবে।

  1. জন্ম নিবন্ধন সনদ পত্র
  2. এমপিও/ সার্ভিস বইয়ের কপি
  3. ভাই-বোনের ভোটার আইডি কার্ড
  4. বিয়ের কাবিন নামা (যদি থাকে)
  5. ভাই-বোনের বোর্ড পরীক্ষার সনদপত্র
  6. যেকোনো বোর্ড পরীক্ষার সনদপত্র
  7. ড্রাইভিং লাইসেন্স
  8. পাসপোর্ট
  9. পিতা/মাতার ভোটার আইডি কার্ড

এখানে যেসব ডকুমেন্ট উল্লেখ করে দেয়া হয়েছে, সেগুলো থেকে আপনার ক্ষেত্রে যেসব প্রযোজ্য, সেগুলো জমা দিবেন। যেগুলো আপনার কাছে নেই সেগুলো জমা দিতে হবেনা।

স্বামী/স্ত্রীর নাম সংশোধন করতে যা যা লাগে

আপনি যদি বিবাহিত হন এবং আপনার ভোটার আইডি কার্ডে স্বামী/স্ত্রীর নাম ভুল থাকে অথবা আপনার ভোটার আইডি কার্ডে স্বামী/স্ত্রীর নাম যুক্ত না থাকে, সেক্ষেত্রে স্বামী/স্ত্রীর নাম যুক্ত করতে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধনের জন্য আবেদন করতে হবে। সংশোধনের জন্য আবেদন করতে চাইলে নিম্নোক্ত ডকুমেন্টগুলো সাবমিট করতে হবে।

  1. সন্তানের ভোটার আইডি কার্ড (যদি থাকে)
  2. অথবা অন্যান্য প্রমাণপত্র
  3. সন্তানদের বোর্ড পরীক্ষার সনদপত্র (যদি থাকে)
  4. বিয়ের কাবিননামা বা তালাকনামা

স্বামী/স্ত্রীর নাম যুক্ত করতে হলে নিকাহনামা জমা দিতে হবে। যদি আইডি কার্ড থেকে নাম বাদ দিতে চান, তাহলে তালাকনামা জমা দিতে হবে।

জন্ম তারিখ সংশোধন করতে যা যা লাগে

ভোটার আইডি কার্ডে যদি আপনার বয়স কম বা বেশি তাকে, জন্ম তারিখ ভুল থাকে, সেক্ষেত্রে বিভিন্ন জায়গায় সমস্যা হবে। এই সমস্যা সমাধান করার জন্য ভোটার আইডি কার্ডের বয়স সংশোধনের জন্য আবেদন করতে হবে। আবেদন করার জন্য নিম্নোক্ত ডকুমেন্টগুলো সাবমিট করতে হবে।

  1. ড্রাইভিং লাইসেন্স (যদি থাকে)
  2. পাসপোর্ট (যদি থাকে)
  3. এমপিও/ সার্ভিস বইয়ের কপি
  4. জন্ম নিবন্ধন সনদ পত্র
  5. চেয়ারম্যান বা কাউন্সিলর কর্তৃক প্রদত্ত পারিবারিক সনদপত্র
  6. যেকোনো বোর্ড পরীক্ষার সনদপত্র
  7. বয়স প্রমাণের মেডিক্যাল টেস্ট রিপোর্ট (সিভিল সার্জন কর্তৃক)

এছাড়া, আপনার জন্ম তারিখ সংশোধন করার ক্ষেত্রে অবশ্যই মেডিকেল টেস্ট রিপোর্ট সাবমিট করবেন। কারণ, মেডিকেল রিপোর্ট ছাড়া সংশোধনের আবেদন অনুমোদিত হবেনা।

ঠিকানা সংশোধন করতে কি কি লাগে

ভোটার আইডি কার্ডে থাকা বর্তমান ঠিকানা সংশোধন করার জন্য নিম্নোক্ত ডকুমেন্টগুলো সহ অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধনের জন্য আবেদন করতে হবে। এছাড়া, সংশোধনের আবেদন করার জন্য নির্বাচন কমিশন অফিস বরাবর একটি আবেদনও করতে পারেন।

  1. জন্ম নিবন্ধন সনদ
  2. অন্যান্য ডকুমেন্ট
  3. ইউটিলিটি বিলের কপি
  4. ইউনিয়ন পরিষদ/পৌরসভা/সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক প্রদত্ত সনদপত্র
  5. জমির দলিল পত্র (যদি থাকে)
  6. পাসপোর্ট (যদি থাকে)

ঠিকানা সংশোধনের জন্য আবেদন করার সময় এগুলো ছাড়াও আরও কিছু ডকুমেন্ট লাগতে পারে।

শেষ কথা

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কি কি লাগে তা বিস্তারিত আলোচনা করেছি এই পোস্টে। ভোটার আইডি কার্ড সংশোধনের জন্য আবেদন করতে যেসব ডকুমেন্ট লাগে সেগুলো ক্যাটাগরি ভেদে ভাগ করে তালিকা করে দেয়া হয়েছে। তাই, আপনি যে ধরনের তথ্য সংশোধন করার জন্য আবেদন করবেন, সেই তথ্য সংশোধন করতে কি কি ডকুমেন্ট লাগবে তা এখানে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

অন্যান্য পোস্টগুলো

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *